ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় জমে উঠেছে ঈদের বাজার: অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশি টহল জোরদার

নাজিম উদ্দিন, পেকুয়া ::

ঈদকে সামনে রেখে পেকুয়া উপজেলার বড় বড় বাজার গুলোতে জমতে শুরু করেছে ঈদের কেনাকাটা। ঈদের আগমনে ক্রেতা বিক্রেতারা এখন ব্যস্থ কেনা বেচায়। রমজানের প্রথম সপ্তাহ থেকে উপজেলার বড় বড় বাজার গুলোতে ঈদকে স্বাগত জানিয়ে তুরন, ডিজিটাল  ব্যানার, পোষ্টার,  পেষ্টুন আর নানা রংয়ের লাইটের আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর, কাপড়ের দোকান, জুয়েলারী ও ক্রোকারিজসহ রকমারী দেকান।

 উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজার পেকুয়া (আলহাজ্ব কবির আহমদ চৌধুরী) পেকুয়া বাজার। এই বাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট হয়েছে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন্ এলাকা যেমন, উপকূলীয় মহেশখালী, মাতার বাড়ী, কুতুবদিয়া ও বদর খালী। স্থল পথ দিয়ে বাঁশখালী, চকরিয়া, চুনতি, লামা ও আলীকদম সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পেশাজীবি, চাকুরী জীবিরা এসে কেনা কাটার জন্যে ভিড় জমায় এ বাজারে।

 এবারের ঈদ বাজার অন্যান্য বছরের চাইতে তুলনামুলকভাবে কেনা বেচা বেশী। সবচাইতে ক্রেতাদের আগমন হচ্ছে সদ্য প্রতিষ্টিত বানিজ্যিক কেন্দ্র এসডি সিটি সেন্টারে। দৃষ্টি নন্দন এই বানিজ্যালয়ে প্রায় দুই শতাধিক দোকানে উপচে পড়া ভিড় চলছে প্রতিনিয়ত। ঈদ বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেশী হলেও  বেচা-কেনা তুলনা মুলকভাবে কোথাও কম নয়।

  ঈদের কেনা-কাটা করতে আসা ক্রেতা সাসাধার জানান, গত বছরের ছেয়ে এই বছর জিনিস পত্রের দাম অনেক বাড়তি, তবুও ঈদ উপলক্ষে পরিবারের সকলের জন্যে নতুন জামা সহ অন্যান্য মালামাল ক্রয় করাটা স্বাভাবিক। দাম বেশী হলেও থেমে নেই ক্রেতাদের কেনাকাটা। পেকুয়া বাজারের একমাত্র হকার মার্কেট থেকে শুরু করে ছোট বড় মার্কেট গুলোতে বিভিন্ন শ্রেণীর লোকের সমাগমে পা রাখার ঠাঁই নেই তিল পরিমান। মুসলিম প্রথার মধ্যে কেউ ঈদ বাজার করতে আসলে আর কেউবা এসেছিল পবিত্র রমজান মাসে দুই তৃতীয়াংশ সময় কাটাতে। অন্যদিকে হিন্দু সম্প্রদায়ীরা বন্ধের দিন গুলোকে সামনে রেখে মেতে উঠেছে আনন্দের কেনাকাটায়। এবারের ঈদ বাজারে মহিলা ক্রেতাদের ভীড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সবাই ব্যাস্থ  তাদের নিজ নিজ পছন্দের জিনিস কিনতে।

  বাজার ঘুরে দেখা যায় মার্কেটগুলোতে কাপড়ের মধ্যে ছোট ছেলে-মেয়ে আর মহিলাদের আইটেমের সমাহার একটু বেশী। উপজেলায় বারবাকিয়া বাজার, রাজাখালী আরবশাহ বাজার, সবুজ বাজার, টৈটং হাজ্বী বাজার, মগনামা কাজী মার্কেট, মহুরী পাড়া বজার, ফুলতলা ষ্টেশন, সোনালী বাজার, শিলখালী জনতা বাজার, উজানটিয়া রূপালী বাজার, পেকুয়া সদরের চড়াপাড়া আদর্শ বাজার সহ  বাঘগুজারা বাজারে নারী-পুরুষের সমাগমে কম বেশী কেনা বেচার ধুম পড়েছে। বেচাকেনা চলছে সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত। বাজারে প্রচুর স্থান পেয়েছে কাতান প্রিন্ট কাপড়, ক্রেতাদের চাহিদা ও বেশী। এছাড়া ফেবিয়ান ও চাইনা নেট, সুঁতি কাতান, প্রিন্ট জর্জেট, পপলিন, ও ভয়েল।  বোরকার কাপড়ের মধ্যে কারিনা কাতান, মাখন কাতান, জর্জেট কাতান ও রয়েছে। এবার বাজারে সব ধরনের থান কাপড়ের দাম চড়া।

 ফলে প্রিন্টের কাপড়ের দিকে নজর দিচ্ছে তরুণীরা। অনেককে আবার বেকায়দায় পড়তে হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রেতারা। অপরদিকে বাজারে এসেছে বেশ কিছু নতুন থ্রিপিস। মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্রেতাদের পছন্দের থ্রিপিস আওয়ারা, এর দাম তুলনামূলক ভাবে বেশি হলে চাহিদা ও তার আনেকটাই বেশি। এর চেয়ে বেশি দামের মধ্যে রয়েছে খুশি, জিলিক ও কলকা আর নিম্ন দামের মধ্যে সুতির থ্রিপিস।

 এদিকে কাপড়ের দোকানের পাশা পাশি ডিপার্টমেন্টাল ও ক্রোকারিজ ষ্টোরগুলোতে ক্রেতাদের ভীড় রয়েছে সমান্তরালে। ক্রেতাদের সবচেয়ে পছন্দের জিনিস হিসাবে স্থান পেয়েছে মেহেদী। ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছরের তুলনায় এই বছর রমজানের প্রথম সপ্তাহ থেকে ঈদ বাজারে কেনাকাটা শুরু হয়েছে, তবে এই পর্যন্ত বেচা-কেনা অনেকটাই ভাল।

 উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব উল করিম এই প্রতিবেদককে জানান, এবারের মতো পবিত্র রমজান ও ঈদ বাজার সামনে রেখে পেকুয়া উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনের যৌথ তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। যানজট নিরশনের জন্য বিশেষ আনসার ও পুলিশ দায়িত্ব পালন করেছে। এদিকে সার্বক্ষনিক ভাবে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা হয়ে হয়েছে পেকুয়া বাজার।

 পেকুয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ জহিরুল ইসলাম খান বলেন, ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ইভটিজিং, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ যে কোন ধরেনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশি টহল জোরদার রেখেছে পেকুয়া থানা প্রশাসন।

পাঠকের মতামত: